
আবু জুহায়ফা ওয়াহাব ইবন আবদিল্লাহ (রা)
রচনায় : ড. মুহাম্মাদ আবদুল মাবুদ
আবূ জুহাযফা (রা) একজন অল্প বয়ষ্ক সাহাবী ছিলেন। সীরাত বিশেষজ্ঞগণ উল্লেখ কবেছেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ওফাতের সময় আবূ জুহায়ফা একজন অপ্রাপ্ত বয়ষ্ক বালক ছিলেন। তবে তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওযা সাল্লামেব মুখ থেকে হাদীস শুনেছেন এবং বর্ণনাকারীগণ তার সূত্রে তা বর্ণনা করেছেন। জীবনের এক পর্যায়ে তিনি কুফায় বসবাস কবতেন। আলী (রা) তাঁর খিলাফতকালে তাকে কূফাব বায়তুল মালেব দায়িত্বশীল নিয়োগ করেন।[1] আলীর (রা) জীবনের সকল ঘটনাব সাথে অত্যন্ত নিষ্ঠার সাথে অংশগ্রহণ করেন। তার প্রতি আলীর (রা) ছিল দৃঢ় আস্থা ও গভীব ভালোবাসা ছিল। একারণে ‘আলী (রা) তাঁকে ‘ওয়াহাব আল-খায়র’ অর্থাৎ উৎকৃষ্ট ওয়াহাব বলতেন। আবার ‘ওহাবুল্লাহ’ ও বলতেন। অর্থাৎ আল্লাহর ওয়াহাব।[2]
আবূ জুহাযফার (রা) ছেলে ‘আওন তাঁব পিতাব সূত্রে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন: “রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম (মক্কা ও মিনার মধ্যবর্তী) আল-আবতাহ উপত্যকায় যাত্রাবিরতি করলেন। বিলাল এসে আযান দিলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম ওজু করলেন। লোকেরা আসতে লাগলো। অত:পর তিনি দু’বাকআত সালাত আদায় করলেন। তখন সামনে হাওদাবাহী উট, নারী ও গাধা অতিক্রম করছিল। আওন আরাে বর্ণনা কবেছেন। একদিন তিনি গোশতের ঝোলে কটি ভিজিয়ে পেট ভরে খেয়ে ঢেকুর তুলতে তুলতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নিকট যান। তাঁর এ অবস্থা দেখে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: ওহে আবূ জুহাযফা! তোমার পেটটা একটু খালি রাখা উচিত। কারণ, দুনিয়াতে যে বেশি পেট ভরে খাবে কিয়ামতের দিন সে বেশি ক্ষুধার্ত থাকবে।’
‘আওন বলেন, আবু জুহায়ফা (রা) দুনিয়া ছেড়ে যাওয়া পর্যন্ত আর কখনো পেট ভরে আহার করেননি। তিনি রাতে খেলে দুপুরে এবং দুপুরে খেলে রাতে খেতেন না।[3]
আল-ওয়াকিদী বলেন, বিশর ইবন মাবওয়ান যখন বসার শাসনকর্তা তখন হিজবী ৭২ (বাহাত্তর) সনে সেখানে তিনি মৃতুববণ করেন। তবে ভিন্ন একটি মতে জিহরী ৭৪ সনে তাঁর মৃত্যু হয়।[4]
তিনি নাবী রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, বারা ইবন আযিব, ও ‘আলী (রা) থেকে হাদীস বর্ণনা কবেছেন। আর তার থেকে যারা বর্ণনা করেছেন তারা হলেন: ইসমাঈল ইবন আবী খালিদ, আল-হাকাম ইবন উতায়বা, যিয়াদ ইবন যায়দ, সালামা ইবন কুহাল, ‘আমি আশ-শাবী, ‘আলী ইবন আল- আমার, আবু ইসহাক আসসাবীঈ, তাঁব ছেলে ‘আওন ইবন আবী জুহায়ফা ও আবূ উমার আল-মুনাববিহী (রা) ।
তথ্যসূত্র :
[1] উসুদুল গাবা-৫/৪৮-৪৯, তাহযীব আল-কামাল ফী আসমা আর-রিজাল-১৮৩৯/৪
[2] তাহযীব আত-তাহযীব-১১/১৪৫
[3] তাহযীব আল-কামাল-২১/১৩৪
[4] প্রাগুক্ত-১৯/৪৮৩, উসুদুল গাবা-৫/৪৯
[মাসিক পৃথিবী পুরনো সংখ্যা থেকে সংগৃহীত]