
শিশুর নৈতিক শিক্ষা
মা-বাবাকে শিশুর শিক্ষা এবং জীবনাচরণ এমনভাবে পরিকল্পনা করতে হবে যাতে তারা হাশরের মাঠে প্রিয় নবীর হাতের দেয়া হাউজে কাওসরের পানি পান করার যোগ্য হয়ে মৃত্যু বরণ করে। পেয়ারা নবীর কাছে মা বাবার অবদানের সাক্ষ্য দিতে পারে। বলতে পারে ইয়া রাসুলল্লাহ। আমার মা বাবার শিক্ষা এবং যত্নের ফলে আজ আপনার সাথে সাক্ষাতের সৌভাগ্য আমার হয়েছে। আপনার মুবারক হাতের দেয়া পানি আমার মা বাবাকে ছেড়ে আমি কি করে পান করতে পারি ?
সন্তান দ্বীনি আমল করে পিতা-মাতার জন্যে দোয়া করার মানসিকতা সম্পন্ন হয়ে গড়ে না উঠলে পিতা-মাতার জন্যে শুধু এ দুনিয়ায়ই সমস্যা হয়ে দেখা দেয়না, বরং আখিরাতে তাদের জন্যে বাবা মাকে অনেক বেশী শাস্তি পেতে হবে। কারণ, সন্তানেরা আল্লাহর কাছে অভিযোগ করবে যে ঈমানদার হওয়ার জন্যে আমাদের বাবা-মা আমাদেরকে শাসন করেনি। সোহাগ দিয়ে বিপথে যেতে সাহায্য করেছে।
আপনার সন্তানকে আল্লাহর কাছে সোপর্দ করুন। তাদেরকে আল্লাহর রাস্তায় রশি ঢিলা করে ছেড়ে দিন। যতদূরে ইচ্ছা গমণ করুক।
জন্মের পর থেকে রাসূলের (সাঃ) সুন্নাহ সমুদ্রে অবগাহন করতে দিন। সকল কাজে এবং কর্মে আপনার সন্তান যেন সুন্নাহ অনুসারী হয়।
আল্লাহ মানুষকে যা দিয়েছেন কোন পিতাই সন্তানকে তার অনু পরিমাণ দিতে পারেনা। তবুও মানুষ সন্তানকে যা দিতে চায় আল্লাহকে তার অনুপরিমাণও দিতে চায়না।
ব্যাঘ্ৰ গোস্ত খেতে খেতে এমনভাবে গোস্তে আসক্তি হয়ে পড়ে যে সে গোস্ত ছাড়া আর কিছুই খেতে চায়না। অন্যকে হত্যা করেও তার চাহিদা পূরণ করে নেয়। যে শিশু দুঃখে অভ্যস্ত নয়, সে নিজের চাহিদা আদায় করে নিতে পারে অন্যকে দুঃখ দিয়েও।।
শিশু বেহেস্তী দূততুল্য। যারা খারাপ কথা বলতে এবং শুনতে অভ্যস্ত, তারাও কথা বলার সময় সতর্ক হয় যদি কোন শিশু কাছে থাকে। বয়স্ক ব্যক্তি এমন কথা বলবেনা যা শিশুর শুনা উচিত নয়।
কোন শিশুকে যত কিছু সে চায় বা আশা করে, সব দেয়া উচিত নয়। ছোটবেলা হতে তার মাঝে অতৃপ্তির প্রতি সহনশীলতা সৃষ্টি করতে হবে। সংযম উন্নয়ন করতে হবে।
দোষ করে অশ্রু স্বজল নেত্রে ক্রন্দন করে- এরূপ শিশুর হৃদয় গঠনের মাঝেই পিতা মাতার সাফল্য হয়েছে। যে শিশু দোষ করে স্বতপ্রবৃত্ত হয়ে কাঁদে, সে বড় হয়ে নিজের শাসক হতে পারবে। সংযমী হবে। জীবন সংগ্রামে সফল হবে। ঈমানদার হলে বেহেস্তি হবে।
অনন্তকালের তুলনায় মানবজীবন একটি মুহুর্তও নয়। মহান স্রষ্টার কাছে একজন মানুষের সারাটি জীবন একটি মূল্যহীন অনুও নয়। শিশুর সব দোষ মা যেভাবে ক্ষমা করে দেন, আমাদের সব পাপ আল্লাহ ক্ষমা করে দিবেন – এ বিশ্বাস নিয়ে মৃত্যুবরণ করতে হবে।
সূত্র: মহানবী ও শিশু বই থেকে। লেখক: এ. জেড. এম. শামসুল আলম