
ছাত্র ছাত্রীদের উদ্দেশ্যে শিক্ষকের উপদেশ
ছাত্র ছাত্রীদের উদ্দেশ্যে শিক্ষকের উপদেশঃ
*’রেসপেক্ট’ বা অন্যকে সম্মান প্রদর্শন এর দশটি শাখা আছে, এর নয়টিই মৌনতায়,আর দশমটি হল : শিশু সুলভ আচরণ বর্জন।
* শত ব্যস্ততার মধ্যে ও প্রতিদিন কিছু সময় জ্ঞানার্জনে ব্যয় করবে, নচেৎ অজ্ঞতার কাছে হবে স্বেচ্ছায় ‘আত্ম -সমর্পণ।’
* এক বছর মেয়াদী পরিকল্পনা করলে ধান চাষ কর,শত বছরের পরিকল্পনায় গাছ লাগাও ,আর সুখী সমৃদ্ধ ও আদর্শ সমাজ গঠনের পরিকল্পনা করলে শিশু-কিশোরদের নৈতিকতা শিক্ষা দিবে, তবেই পরিপূর্ণ জীবনের স্বাদ পাবে।
* দূর -বীক্ষণ যন্ত্রের ন্যায় হয়ো না,অন্যের ছোট ছোট ত্রুটি গুলো বড় করে দেখার অপচেষ্টা ক’রোনা, কুৎসিত মানসিকতা পরিহারকর,
নচেৎ অশ্লীলতার দুয়ার খুলে যাবে, চোখ তোমার আছে দুটো, কিন্তু মানুষের আছে অজস্র , অগণিত।
* তুমি হবে আয়না সদৃশ, আয়নার সামনে যা আসে ,তার ছবিই প্রতিবিম্বিত হয়, কোন প্রকার সংযোজন বিয়োজন ছাড়াই।
* দুখী মানুষের অশ্রুর ফোঁটা গুলো বাহ্যিক ভাবে পানির ফোঁটা মনে হলেও আসলে এগুলো একটি বিশেষ ভাষার বর্ণমালা,যা বুঝার মত লোক পাওয়া দুস্কর।
* প্রত্যেকের অন্তরেই রোপণ করা আছে ‘সম্ভবনা’ নামক বৃক্ষের ছোট্ট একটি চারা, কেউ যদি চারাটি কল্যাণের পানিতে ভিজিয়ে রাখে,
এর ডাল-পালা,শাখা-পল্লবে একদিন কল্যাণের বড় এক বাগানে পরিণত হবে,
আর যদি চারাটিতে অনিষ্ট ,অকল্যাণ,ও বিপর্যয়ের নোংরা পানি দেয়া হয়,তবে তা নষ্ট হবে, ভুমির ও উর্বরতা শক্তি হারাবে।
* একতরফা শুনে পারস্পরিক বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিবে না, কেননা কত শত আহত মজলুম আছেন, যারা ন্যায় বিচার পাবে না বরং আরো হুমকিতে পড়ার সম্ভবনা আছে,তাই তারা নীরব থাকেন,
পক্ষান্তরে কত শত খুনী আছেন, যারা ভিকটিমের ভান করে হাউকাউ করে থাকেন।
* তোমার অনুভূতির সবটুকু এক পাত্রে ঢেলে দিও না,হতে পারে পাত্রটি ছিদ্রযুক্ত।
* কোন কোন মানুষের মন হেমন্তকালে গাছের পাতার মতো,যতই পানি দাও তা আর সতেজ ও সবুজ হবে না, এগুলোতে পানি ঢেলে লাভ নেই, ছেড়ে দাও ,বাতাসে উড়ে যাক।
* পানি তেলকে ধমকের সুরে বলেছিল,
তুমি এত বে -আদব কেন ? আমার উপর অবস্থান নাও ,অথচ আমার বুকে ই তোমার জন্ম !
জবাবে তেল বলল, তুমি পর্বত থেকে নদীর দু’পাশে ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে গানের সুর শুনিয়ে সাগরের বুকে গিয়ে আরাম কর,
অথচ আমি পিষা-পিষির নিষ্পেষণ ও যাতনা সহ্য করি,
জান ই তো প্রবাদ আছেঃ
وبالصبر يعلو القدر
‘ সবরে ভাগ্যান্নয়ন হয় , একটু সবর কর, কষ্টের পরপর ই সুখ আসে।
* তুমি খাবার হাতে পাখির দিকে এগিয়ে যেতেই পাখিটি উড়ে যায়, এতে বিস্মিত হয়ো না,পাখি কিছু মানুষের বিপরীত চিন্তা করে, পাখিরা বিশ্বাস করে এক টুকরো রুটির চেয়ে স্বাধীনতার মূল্য অনেক অনেক বেশি।
* কথামালা শস্য -বীজের মত ই,তবে পার্থক্য হলো বীজ মাটিতে রোপণ করা হয়,আর কথাগুলো মানুষের অন্তরে প্রোথিত হয়,
সুতরাং মানুষের অন্তরে কী বপন করছ ভেবে দেখ, এমন দিন আসবে, তুমি ঐ বৃক্ষের ফল খেতে বাধ্য হবে।
সব সময়ই মাথা উঁচু রাখবে,যত সঙ্কটেই পড়না কেন,অন্যায় এর কাছে একবার মাথা নত করলে হয়তো পুনরায় আর মাথা উঁচু করার সুযোগ পাবে না।
* নিজের দু’পায়ের উপর দাঁড়ালে তুমি হয়তো অতি সামান্য পরিমাণ মাটির মালিক হতে পারবে,কিন্তু তুমি যদি তোমার নীতি-আদর্শের উপর অটল ও অবিচল থাক,মনে হবে পুরো পৃথিবীই তোমার ।
* কোন কিছুতেই মাত্রাতিরিক্ত বা বাড়াবাড়ি সুফল বয়ে আনে না,যে চারাটিকে পানি দিয়ে বাঁচিয়ে রেখেছ,আরো অতিরিক্ত পানি দিলে তা অঙ্কুরেই বিনষ্ট হবে।
*সমুদ্রের অথৈ পানিতে নৌকা ডুবে না, যতক্ষন নৌকার ভেতর পানি না ঢুকে,অনুরূপ ব্যার্থতা তোমার জীবনে নেতিবাচক প্রভাব বিস্তার করতে অক্ষম, তবে তুমি নিজেই যদি জীবন সম্পর্কে উদাসীন ও হতোদ্যম হয়ে পড়, সেটা আলাদা ব্যাপার।
* আজকের মত শেষ কথা :
তুমি কারো নিকট থেকে কোন রূপ শোভন আচরণ পাওনি,বলেই কি তুমি অন্যের প্রতি শোভন আচরণ করবে না?
كن محسنا حتى وإن لم تلق احسانا
কারো অনুকম্পা না পেলেও তুমি অন্যের প্রতি সদয় হও, সবার জন্য সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দাও।