
যিশুই আমাকে নিয়ে আসলেন ইসলামের দিকে
যিশুই আমাকে নিয়ে আসলেন ইসলামের দিকে : ফুটবলার এমানুয়েল আদেবায়ের
টটেনহাম স্ট্রাইকার্ এমানুয়েল আদেবায়ের তাঁর ইসলাম গ্রহনের কারন জানালেন কালিমা (অর্থাৎ শাহাদাত) পাঠের প্রায় এক মাস পর। তার মতে দুই ধর্মের মধ্যকার সামন্জস্য গুলোই তাকে সত্যের দিকে নিয়ে গেছে।
আদেবায়ের বলেছেন্, “যিশু (আ:) আমাদের শিখিয়েছেন একমাত্র ঈশরের উপাসনা করতে [ডিয়ট ৬:৪],
মুসলিমরাও এক ঈশ্বরে বিশ্বাস করে, যেমনটা শিখানো হয়েছে কুরআনে ৪:১৭১”। [সূত্র্: হেরাল্ড্]
-গত মাসে পোস্ট করা এক ইউটিউব ভিডিওতে দেখা গেছে, আদেবায়ের শাহাদাত বা সাক্ষ্য প্রদানের পর,অর্থাৎ কালিমা পাঠের পর তার ইসলাম গ্রহনের কারন হিসেবে ১৩ টি কারন আলোচনা করেছেন। সাদা জুব্বা গায়ে দিয়ে আদেবায়ের ঘোষণা দিলেন্, “মুহাম্মাদ (স্:) আল্লাহর রাসূল্”।
-তার ইসলাম গ্রহনের পিছনে অন্যতম কারন ছিল যে, যিশু (আ:) কখনো শুকরের মাংস খাননি, যেমনটা মুসলিমরা শুকর ও তার মাংসকে অপবিত্র ও অস্বাস্থ্যকর মনে করে। টগলিজ ফুটবলার এর মতে, যিশু প্রায়ই আসসালামু আলাইকুম (আপনার উপর শান্তি বর্ষিত হোক) এবং ইনশাআল্লাহ (যদি আল্লাহ চান) এর মত শব্দ গুলো ব্যবহার করেছেন, এই শব্দগুলো কুরআনে বর্নিত আছে।
আদেবায়ের জোড় দিয়ে বলেন, “যিশু মুখ, হাত ও পা ধুয়েছেন প্রার্থনা করার আগে।মুসলিমরাও এরকম করে। ঈশা (আঃ) এবং বাইবেলের অন্যান্য নবীরা প্রার্থনা করার সময় তাদের মাথা মাটিতে লাগিয়েছেন (মথি ২৬ঃ৩৯)। মুসলিমরাও এমনটি করে যা শিখানো হয়েছে কুরআন ৩:৪৩ -এ।”
-“ঈসা (আঃ) এর দাড়ি ছিল এবং তিনি জুব্বা পড়তেন। এটা মুসলিমদের জন্যও সুন্নত। ঈসা (আঃ) অন্যান্য নবীদের আইন বিশ্বাস করেছেন এবং পালনও করেছেন (মথি ৫:১৭)। মুসলিমরা অন্যান্য নবীদের উপর বিশ্বাস করে (কুরআন ২:৮৩ ও ২:২৮৫)।”
আদেবায়ের মার্টজ, মোনাকো, আরসেনাল, রিয়েল মাদ্রিদ এবং ম্যাঞ্চেস্টার সিটি এর জন্য খেলেছেন। তাকে ২০০৮ সালে ‘আফ্রিকান ফুটবলার অফ দ্যা ইয়ার’ এর জন্য ভোট দেয়া হয়েছিল। লম্বা, দক্ষ, শক্তিশালী এবং স্কোর তৈরিতে পারদর্শী এই ফুটবলার ২০০৬ বিশ্বকাপে (জার্মানি), টোগো জাতীয় দলের প্রতিনিধিত্ব করেছেন, যা ঐ দেশের জন্য প্রথম ও শেষ অংশগ্রহন ছিল বিশ্বকাপে। তিনি বর্তমানে ২৮ গোল নিয়ে টোগোর সর্বকালের সেরা গোলদাতা।
-ঈশা (আঃ) এর মা মরিয়ম (আঃ) এর চারিত্রিক পবিত্রতার দিকে ইংগিত করে আদেবায়ের বলেন, মেরি সবসময় সারা শরীর ঢেকে শালীন পোশাক পড়তেন এবং ঘোমটা দিতেন; মুসলিম মেয়েদের জন্যও এধরনের শালীনতা মেনে চলা ধর্মীয়ভাবে বাধ্যতামূলক এবং তাঁরা হিজাবও করে থাকে।
-দশম যে কারনটি আদেবায়ের জানালেন, সেটা হচ্ছে রোজা যা ইসলাম ও খ্রীষ্টান – উভয় ধর্মে আছে। তিনি বলেন, “যিশু ও বাইবেলের অন্যান্য নবীরা ৪০ দিন পর্যন্ত রোজা রেখেছেন। (সূত্রঃ এক্সোডাস ৩৪:২৮, ডেনিয়েল ১০:২-৬, ১ কিন্স ১৯:৮, এবং মথি ৪:১) মুসলিমরাও এই রীতি পালন করে। রমজান মাসে মুসলিমদের ৩০ দিন রোজা রাখা বাধ্যতামূলক (কুরআন ২:১৮৩) এবং পূণ্যের পরিমাণ বাড়ানোর জন্য অনেকে আরো অতিরিক্ত ৬ টি রোজাও রেখে থাকে।”
-আরো অন্যান্য কারন জানাতে গিয়ে আদেবায়ের বলেন, “ঘরে প্রবেশের সম্বোধন হিসেবে যিশু আমাদের বলতে শিখিয়েছেন, “এই গৃহে শান্তি বর্ষিত হোক” (সূত্রঃ লুক ১০:৫), আর লোকদের অভ্যর্থনা হিসেবে বলতে শিখিয়েছেন,”তোমাদের উপর শান্তি বর্ষিত হোক”। মুসলিমরা হুবহু এমনটিই করে থাকে। যখন আমরা (মুসলিমরা) নিজের বা অন্যের ঘরে ঢুকি, তখন বলি, “বিসমিল্লাহ্” আর অন্যদের অভ্যর্থনা জানাই “আসসালামু আলাইকুম (তোমাদের উপর শান্তি বর্ষিত হোক)” বলে, যেমনটা শিখানো হয়েছে কুরআনের ২৪:৬১ আয়াতে।”
-তিনি আরো বলেন, “যিশুর খাতনা হয়েছিল। আর ইসলাম ধর্ম অনুযায়ী, খাতনা করানো ৫ টি সভাবজাত কাজসমূহের ১ টি। তাই মুসলিম পুরুষদের খাতনা করাতে হয়। যিশু আরামাইক ভাষা বলতেন এবং ঈশ্বরকে ডাকতেন ‘এলাহ’, যা ‘আল্লাহ’ শব্দের মতই উচ্চারন। আরামাইক হচ্ছে প্রাচীন বাইবেলীয় ভাষা। এই ভাষা সেমিটিক ভাষাসমূহের একটি (যেমন, হিব্রু, আরবি, ইথিপিয়, প্রাচীন আসিরিয় এবং বাইবেলীয় আকাদিয়ান) “৩১ বছর বয়সী এডিবয়ের আগে থেকেই ধার্মিক হিসেবেই পরিচিত। এই সাবেক আর্সেনাল, ম্যানসিটি ও রিয়াল মাদ্রিদ ফরোয়ার্ড একজন নিবেদিত খৃষ্টান ছিলেন।
মুসলিম হওয়ার পর তিনি বলেন,”এখন আমাকে বল, কে যিশুর আসল অনুসারী? অবশ্যই মুসলিম। এখন আমি বিশ্বাস করি আমিই যিশুর সত্যিকার অনুসারী।”