
ইসলাম ‘আমার অন্তরকে প্রশান্ত করেছে’
বিষয়: কেন আমি ইসলামকে ভালোবাসি (পর্ব-২)
লিখেছেন: মোহাম্মদ এনামুল
শিরোনাম: ‘আমার অন্তরকে প্রশান্ত করেছে’
.
একজন মানুষের জন্য ইসলামকে ভালোবাসার বহু কারণই রয়েছে । আর এই ভালোবাসার পেছনে অনুভূতিগুলো সম্পূর্ণরূপে প্রকাশ করা সত্যিই অসম্ভব । তবুও আমার কিছু অনুভূতি ও বিশ্বাস প্রকাশ করছি, যা হয়তো অন্য কোন ভাইকে ইসলাম সম্পর্কে নতুনভাবে ভাবতে শেখাবে, ইচ্ছা যোগাবে, ইন শা আল্লাহ্।
ইসলাম এমন একজন সৃষ্টিকর্তায় বিশ্বাসী যিনি সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করেন ও সবার প্রতি অনুগ্রহ করেন । কোন ব্যক্তি যখন তার অনুভূতি কিংবা চাওয়া-পাওয়াকে শেয়ার করার মতো পৃথিবীর কোন মানুষকেই কাছে পায়না । তখন তার পক্ষে একমাত্র যে সত্তার নিকট ধারস্থ হওয়ার সুযোগ থাকে, তিনিই সমস্ত জাহানের সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ্ সুবহানওয়া তা’আলা ।
ইসলাম ধর্মের প্রধান ধর্ম গ্রন্থ আল কুরআনেই বলা আছে যে,
إِنَّ الدِّينَ عِندَ اللَّهِ الْإِسْلَامُ
وَمَن يَبْتَغِ غَيْرَ الْإِسْلَامِ دِينًا فَلَن يُقْبَلَ مِنْهُ وَهُوَ فِي الْآخِرَةِ مِنَ الْخَاسِرِينَ
”একমাত্র গ্রহন যোগ্য দিন হল ‘ইসলাম’ এবং ইসলাম ব্যতীত অন্য কোন দ্বীন তালাশ করলে তা কখনো কবুল করা হবেনা ।” (সূরা আল-ইমরান: ১৯, ও ৮৫)
এবং আল্লাহ সুবহানা ওয়া তাআলা এই চ্যালেঞ্জও দিয়েছেন যে,
ذَٰلِكَ الْكِتَابُ لَا رَيْبَ
”এতে (কুরআনে) কোন সন্দেহ নেই ।” (সূরা বাকারা: ২)
আর আজ পর্যন্ত কেউ এই চ্যালেঞ্জের মুকাবেলা করতে পারেনি, এবং এই গ্রন্থের মধ্যে কোন ভুলও দেখাতে পারেনি । এমনকি বর্তমানে পবিত্র কুরআন ব্যতীত আর কোন নির্ভুল ধর্মীয় গ্রন্থ পৃথিবীতে নেই। যা আমার বিশ্বাসকে দৃঢ় করে, যা আমার অন্তরকে প্রশান্ত করে।
.
এই পৃথিবীতে পবিত্র কুরআন এর চেয়ে শ্রেষ্ঠ সাহিত্য দ্বিতীয়টি নেই। পবিত্র কুরআনে অবিশ্বাসীদের এরূপ আরেকটি গ্রন্থ তৈরির চ্যালেঞ্জ দিয়ে আল্লাহ তা’আলা বলেনঃ
وَإِن كُنتُمْ فِي رَيْبٍ مِّمَّا نَزَّلْنَا عَلَىٰ عَبْدِنَا فَأْتُوا بِسُورَةٍ مِّن مِّثْلِهِ وَادْعُوا شُهَدَاءَكُم مِّن دُونِ اللَّهِ إِن كُنتُمْ صَادِقِينَ
فَإِن لَّمْ تَفْعَلُوا وَلَن تَفْعَلُوا فَاتَّقُوا النَّارَ الَّتِي وَقُودُهَا النَّاسُ وَالْحِجَارَةُ ۖ أُعِدَّتْ لِلْكَافِرِينَ
.
“আমি আমার বান্দার প্রতি যা নাযিল করেছি, এ বিষয়ে যদি তোমাদের কোন সন্দেহ থাকে, তাহলে এর মত একটি সূরা রচনা করে নিয়ে আসো। আল্লাহ ছাড়া তোমাদের সাহায্যকারীদেরকেও সাথে নাও- যদি তোমরা সত্যবাদী হয়ে থাক।আর যদি তা না পার, অবশ্য তোমরা তা কখনও পারবেনা, তাহলে সে দোযখের আগুন থেকে পানা চাও, যার জ্বালানী হবে মানুষ ও পাথর। (সূরা বাকারা: ২৩-২৪)
.
কুরআন তার যে কোন একটি মাত্র সূরার মত অনুরূপ আরেকটি সূরা তৈরির চ্যালেঞ্জ দিয়েছে। কুরআনে বহুবার এধরণের চ্যালেঞ্জের পুনরাবৃত্তিও হয়েছে। এখন পর্যন্ত কুরআনের এ চ্যলেঞ্জ অর্থাৎ কোন একটি সূরার মত সত্য, সৌন্দর্য, অলংকার, গভীরতা ও অর্থের দিক থেকে সমমানের আরেকটি সূরা তৈরি অপূরণই থেকে গেছে। যা ভবিষ্যতেও সম্ভব হবে না। আর এই সত্য গ্রন্থের চুড়ান্ত দিক নির্দেশনা আমাকে প্রতিনিয়ত বিমোহিত করেই চলছে।
এছাড়া কুরআনের সাথে প্রতিষ্ঠিত বিজ্ঞানও মিলে যায়। যেসব তথ্যগুলো কুরআন ১৪০০ বছর পর্বেই বলে দিয়েছে, বিজ্ঞান এখন এসে তাঁর কিছু খুঁজে পাচ্ছে এবং ভবিষ্যৎ গবেষণার জন্যও কুরআন থেকে সিগনাল নিচ্ছে। কতইনা চমৎকার ইসলামের বিধান, কতইনা তথ্যবহুল আল্লাহর বিধান । যা প্রতিনিয়ত আমার জন্য চিন্তার খোরাক যোগাচ্ছে।
.
মানুষকে সঠিক পথ দেখানোর জন্য আল্লাহ্ সুবহানওয়া তা’আলা যুগে, যুগে নবী- রসূল পাঠিয়েছেন, যেন মানুষ সঠিক পথ সম্পর্কে সহজেই জানতে পারে এবং তাঁর প্রভুর সন্তুষ্টির দিকে চলে আসতে পারে। অর্থাৎ আমার প্রভুই চান আমার উপর সন্তুষ্ট থাকতে, আমাকে পুরস্কৃত করতে। যা আমার চলার পথকে নতুন গতি এনে দিয়েছে, আমাকে নতুনভাবে ভাবতে শিখিয়েছে, আমার অন্তরকে প্রশান্ত করেছে। আলহামদুলিল্লাহ।