
উচিত বিচার!
বিদ্যালয়ে যাওয়ার পথে এক অচল লোক আমার কাছে সাহায্য চেয়ে বলল, বাবা, যা দিবে হাতে, তা যাবে সাথে। আমি লক্ষ্য করলাম, তার সারা গায়ে এক বিন্দু রক্ত দেখা যাচ্ছে না। মুখের দিকে চেয়ে আমার মন নরম হ’ল, কিন্তু টাকা দিতে অক্ষম হ’লাম। কারণ আমার পকেটে কোন টাকা ছিল না। তারপর কিছুদূর পথ চলার পর বিদ্যালয়ে পৌঁছলাম। প্রধান শিক্ষককে জিজ্ঞেস করলাম, রাস্তায় একটা অচল লোক দেখে আসলাম। জগতে কি ঐ লোকের কোন আপনজন নেই? শুনামাত্ৰই প্ৰধান শিক্ষক ও কয়েকজন সহকারী শিক্ষক একযোগে বললেন, ঠিক হয়েছে, ঠিক হয়েছে।
আমি কিছুই বুঝতে না পেরে বললাম, ঘটনাটা আমাকে খুলে বলুন। প্রধান শিক্ষক বললেন, ‘ঐ পঙ্গু লোকটি পিতার একমাত্ৰ সন্তান। পিতার চল্লিশ বিঘা জমি। এত সম্পদ থাকা সত্ত্বেও সে অর্থের লোভে এক মৃতব্যক্তির কবরে তার মাথা কাটার জন্য যায়। তখন কিসে যেন ওকে উঁচু করে চল্লিশ হাতের মত দূরে ফেলে দেয়। এতে তার পা নষ্ট হয়ে যায় এবং গায়ে কোন রক্ত দেখা যায় না। এলাকার বড় হাসপাতালে চিকিৎসা করানো হয়।
পিতার চল্লিশ বিঘা জমি শেষ হয়ে গেছে চিকিৎসার খরচ যোগাতে। তবুও ঐ পুঙ্গ লোকের গায়ে কোন রক্ত ফিরে আসেনি। হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে, এখন রাস্তায় পড়ে থেকে ভিক্ষা করে খায়। অঢেল সম্পদের মালিক হওয়া সত্ত্বেও লোভের বশবতীর্ণ হয়ে পাপ কাজে লিপ্ত হওয়ায় আল্লাহ দুনিয়াতেই তার উচিত বিচার করেছেন।
রচনায়ঃ শাহ মুযযাম্মিল হক
জয়সারা, আত্রাই, নওগাঁ।
সূত্র: আত-তাহরীক পুরনো সংখ্যা।