
কোরআন ও সহীহ হাদীসের আলোকে রমজান মাসে একজন মুমিনের দায়িত্ব ও কর্তব্য (পর্ব-৫)
আজকের বিষয়
কোরআন ও সহীহ হাদীসের আলোকে রমজান মাসে একজন মুমিনের দায়িত্ব ও কর্তব্য (পর্ব5)
তারাবীহ, তাহজ্জুদ এবং রাতের যে কোন নফল নামায এর অন্তর্ভূক্ত। যে সকল আমলের মাধ্যমে মু’মিন ব্যক্তি রামাদান মাসে আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করতে পারে, তন্মধ্যে কিয়ামুল লাইল সবচেয়ে উত্তম। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,
‘‘ফরয নামাযের পর সর্বোত্তম নামায হচ্ছে রাতের নামায”। (সহীহ মুসলিম, হাদীস নং: ২৮১২)
রাতের নামাযের প্রশংসায় আল্লাহ বলেন,
‘‘রহমানের বান্দাহ তারাই, যারা পৃথিবীতে নম্রভাবে চলাফেরা করে এবং মূর্খ ব্যক্তিরা যখন তাদেরকে সম্বোধন করে কথা বলে, তখন তারা বলে, ‘সালাম’ এবং যারা রাত্রিযাপন করে তাদের পানলকর্তার উদ্দেশ্যে সেজদাবনত হয়ে ও দন্ডায়মান হয়ে’’। (সূরা আল-ফুরকান: ৬৩-৬৪)
আল্লাহ অন্যত্র বলেন,
‘‘রাতের কিয়দংশে তারা নিদ্রা যেত এবং রাতের শেষ প্রহরে তারা ক্ষমা প্রার্থনা করত।’’ (সূরা আয-যারিয়াত: ১৭-১৮)
মূলত: কিয়ামুল লাইল ছিল নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও তার সাহাবীদের নিয়মিত আমল। আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বলেন,
‘‘কিয়ামুল লাইল ত্যাগ করো না। কেননা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তা ত্যাগ করতেন না। অসুস্থ হলে কিংবা অলসতা বোধ করলে তিনি বসে নামায পড়তেন।’’ (মুসনাদ আহমাদ, হাদীস নং ২৬১১৪ ও সুনান আবি দাঊদ, হাদীস নং ১৩০৭)।
রামাদানে কিয়ামুল লাইলের আলাদা গুরুত্ব রয়েছে। তাই নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,
‘‘যে ব্যক্তি রামাদান মাসে ঈমানের সাথে এবং সওয়াবের আশায় (রাতের নামাযে) দাঁড়ায় তার পূর্ববর্তী সকল গোনাহ মাফ করে দেয়া হবে।’’ (সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৯০৫ ও সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১৮১৫)
সুনানের গ্রন্থসমূহে সহীহ সনদে বর্ণিত হয়েছে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,
‘‘যে ব্যক্তি ইমাম নামায থেকে বিরত হওয়া পর্যন্ত ইমামের সাথে (কিয়ামুল লাইলে) দাঁড়াবে, তাহলে তার এ আমল রাত্রিভর কিয়ামের সমতুল্য হিসাবে লিখা হবে।’’ (সুনান আত-তিরমিযী, হাদীস নং ৮০৬ ও সুনান আন-নাসাঈ, হাদীস নং ১৬০৫)
আয়িশা রাদিয়াল্লাহু আনহাকে জিজ্ঞাসা করা হলো, রামাদানে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নামায কেমন ছিলো? তিনি বললেন,
“রামাদানে এবং রামাদান ব্যতীত অন্য সময়ে এগার রাকআতের বেশী তিনি পড়তেন না।’’ (সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১০৯৬ ও সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১৭৫৭)
আগামী পর্বে মাহে রমজানে রোজার ফজিলত বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে ইনশা আল্লাহ ।