
ইসলাম বিরোধী আইনজারির বিধান ও ফিতনাতুত তাকফীর
তাফসীর হুকুম বি-গয়রি মা-আন্ঝালাল্লাহ
[ ইসলাম বিরোধী আইনজারির বিধান ] ও ফিতনাতুত তাকফীর
অনুবাদ ও সংকলন : কামাল আহমাদ
এ গ্রন্থটি মূলত অনুবাদ ও সংকলন। গ্রন্থটির মূল প্রতিপাদ্য বিষয় হলো, যেসব মুসলিম শাসক নিজ নিজ দেশে আল্লাহর আইন বাস্তবায়ন করছে না, তারা কি কেবল একারণেই সুস্পষ্টভাবে মুরতাদ-কাফির ? নাকি তাদের এই কার্যক্রমের কারণ পরিস্থিতি বিশেষে তারা কবীরা গোনাহে লিপ্ত পাপী মুসলিম ( সালাত ক্বায়েমের শর্তে ) ? আবার পরিস্থিতি বিশেষে ( দ্বীনের ছোট বা বড় বিষয়কে অবজ্ঞা, তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য কিংবা বিরোধীতার কারণে) সুস্পষ্ট মুরতাদ-কাফির ? এ পর্যায়ে মুসলিম দেশগুলোর শাসকদের ব্যাপারে ঢালাওভাবে কোন কোন মহল সুস্পষ্ট কাফির ও তাদের রক্ত হালাল হওয়ার ফতওয়া জারি করে ক্ষমতা দখল ও দেশবিরোধী নানাবিধ তত্পরতায় লিপ্ত রয়েছে। এ ফাতওয়া জারি হওয়ার মূলে রয়েছে কুরআনের শাব্দিক অর্থকে ব্যবহার। পক্ষান্তরে এর প্রায়োগিক অর্থ সাহাবীগণ (রা) ও পরবর্তী ইমাম ও মুহাদ্দিসগণ (সালাফে-সালেহীন) কিভাবে নিয়েছেন তা থেকে দূরে থাকা। যারা কুরআন ও হাদীসের দাবি উপস্থাপনে এই পথ থেকে ভিন্ন পন্থা অবলম্বন করেছেন, তাদেরই এখানে খারেজী বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে শায়খ নাসিরুদ্দীন আলবানী (রহ)-কে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে দেখি। এর আগে আমাদের সাইটে প্রকাশিত তাঁর “ফিতনাতুত তাকফীর” বইটি পাবলিশ করা হয়েছে।
অনেকেই এই বইটির সমালোচনা করেছেন। সেই সাথে এও দাবী করা হয়েছে যে এ সম্পর্কিত বক্তব্যগুলো তাঁর ব্যক্তিগত ইজতিহাদ। অথচ এটা তাঁর উপর অপবাদ ছাড়া আ কিছুই না। যারা শায়খ আলবানী সম্পর্কে জানেন তারা সহজেই উপলব্ধি করতে পারবেন যে, তিনি আক্বীদার বিষয়গুলোতে ইজতিহাদের অত্যন্ত বিরোধী। মাসআলাগত বিষয়ে ইজতিহাদকে গ্রহণ করলেও আক্বীদার বিষয়ে তিনি ছাড় দেননা। এই লেকচার শুনলেই বুঝতে পারবেন।
অথচ তাঁর নামে অপবাদ দেয়া হয়েছে। সূরা মায়িদার ৪৪-৪৭ নং আয়াতের যে তাফসীর করেছেন তা যে সালাফে-সালেহীনদেরই তাফসীর । তা এই বইয়ে প্রমাণ করা হয়েছে।
বইটিতে যেসব বিষয় আলোচিত হয়েছে সেগুলো হলো :
প্রথমেই আয়াতগুলোর তাফসীর শায়খ আলবানী (রহ) হতে তুলে ধরা হয়েছে। এ সম্পর্কিত ইবনে আব্বাস (রা)-এর তাফসীরটিকে সহীহ বলেছেন এবং এর দ্বারা দলিল নিয়েছেন। এ সম্পর্কি শায়খ উসাইমীনের (রহ) টীকাও উল্লেখ করা হয়েছে।
পরবর্তীতে এ আয়াতগুলো সম্পর্কে কি রকম তাফসীর বিখ্যাত তাফসীর গ্রন্থে কি বলা হয়েছে তাও উল্লেখ করা হয়েছে।
যেসব তাফসীর থেকে উদ্ধৃতি করা হয়েছে সেগুলো হলো :
- তাফসীরে কুরতবী
- তাফসীর ইবনে কাসীর
- তাফসীরে বাগভী
- তাফসীরে কাবীর
- তাফসীরে খাযেন
এছাড়া উপমহাদেশের বিখ্যাত তাফসীর থেকেও তাফসীর নেওয়া হয়েছে :
- তাফসীরে মাযহারী
- তাফহীমুল কুরআন
- তাফসীরে উসমানী
- তাফসীরে মাজেদী
- বাদীউত তাফসীর
হাকিম বা বিচারককে কখন কাফির হিসেবে গণ্য করা যাবে ” এ সম্পর্কে আলোচনাও যুক্ত করা হয়েছে অনুবাদকের পক্ষ থেকে।
আয়াতে তাহক্বীম ( সূরা মায়িদাহ, আয়াত ৪৪-৪৭) সম্পর্কে সলফে-সালেহীনদের উদ্ধৃতিও তুলে ধরা হয়েছে। সেযব বিখ্যাত মুহাদ্দিস এর মতামত তুলে ধরা হয়েছে তাদের অন্যতম হলো :
- ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল (রহ)
- ইমাম ইবনুল বাত্তাহ (রহ)
- ইমাম ইবনে ‘আব্দুল বার (রহ)
- ইমাম ইবনুল জাওযী (রহ)
- ইমাম কুরতবী (রহ)
- শায়খুল ইসলাম ইমাম ইবনে তাইমিয়াহ (রহ)
- ইমাম ইবনুল কায়্যিম ( রহ)
- হাফেস ইবনে হাজার আসকালানী (রহ)
- শায়খ আব্দুর রহমান বিন নাসির সা’দী (রহ)
এরপর শাইখ নাসিরুদ্দীন আলবানী রচিত ফিতনাতুত তাকফীর থেকে আলোচনা তুলে ধরা হয়েছে। এসম্পর্কে বিস্তারিত জানতে আমাদের আগের প্রকাশিত ” ফিতনাতুত তাকফীর” বইটি পড়ুন।
এছাড়াও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় কুফর দূনা কুফর কুফরে আমালী , কুফরে ই’তিক্বাদী, হাকিম ও মাহকুম (প্রজা/শাসিত)-এর প্রতি তাকফীর, ইস্তিহলালে ক্বলবী ও ইস্তিহলালে ‘আমালী’র পার্থক্য, মুরতাদ সম্পকীয় হুকুমের বাস্তবায়ন, বিজয় ও ইক্বামাতে দ্বীনের সহীহ পদ্ধতি, রাসূলুল্লাহ (সা) তাসফিয়্যাহ ও তারবিয়্যাহ’র উসওয়াতুন হাসানাহ ( সর্বোত্তম আদর্শ) বিষয়ে আলোচনা পেশ করা হয়েছে।
শায়খ ইবনে বায (রহ) এর ফতোয়া “ঈমান,ইরজা’ ও মুরজিয়া” বিষয়ে প্রশ্নোত্তর আকারে পেশ করা হয়েছে।
পরিশেষে,ইবাদাত ও ইতা’আত সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা দেয়ার জন্য ‘আর রাহীকুল মাখতুম ” এর লেখক “শাইখ সফিউর রহমান মুবারকপুরী’র রচনা উল্লেখ করেছেন। এখানে লেখক আলোচনা উল্লেখ করে মাওলানা মওদুদীর এ সংক্রান্ত বিভ্রান্তিুও তুলে ধরেছেন।
এছাড়া “আমাদের হাকিম কেবলই একজন-আল্লাহ তা’আলা” এ সম্পর্কিত রচনার তাহক্বীক অনুবাদ করেছেন।
কয়েকটি প্রাসঙ্গিক পরিভাষা যেমন ‘ইবাদাত, ইতা’আত, মু’আমালাত ও ইস্তি’আনাত গুলো সুন্দরভাবে বিশ্লেষণ করা হয়েছে।
আল্লাহ আমাদেরকে এ বিষয়ে মতভেদ দূরে করে দিন এবং আমাদের হিদায়াতের পথে রাখুন।
পরিশেষে বইটির ডাউনলোড লিংক
বি.দ্র. বইটি পছন্দ হলে শেয়ার করুন। সেই সাথে আমাদের সাইটের সূত্র উল্লেখ করবেন। আপনাদের সহযোগীতা আমাদের সাইটের প্রচারে সহায়ক হবে।