
কল্যাণকর কাজে উদ্বুদ্ধকারী কতিপয় হাদীস
লেখক: মুহাম্মদ সালেহ আল মুনাজ্জিদ
অনুবাদ:আব্দুন নূর বিন আব্দুল জববার
সকল প্রশংসা আল্লাহর জন্য এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি দরুদ ও সালাম বর্ষিত হোক। সওয়াব অর্জনের ক্ষেত্র অনেক এবং ভাল ও উত্তম কাজের প্রতিদান বিরাট।
قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى الله ُعَلَيْهِ وَسَلَّمَ: فِيْمَا يَرْوِىْ عَن رَّبِّهِ عَزَّ وَجَلَّ قَالَ: إِنَّ اللهَ كَتَبَ الحَْسَنَاتِ وَالسَّيِّئَاتِ ثُّمَّ بَيَّنَ ذَلِكَ فَمَنْ هَمَّ بِحَسَنَةٍ فَلَمْ يَعْمَلْهَا كَتَبَهَا الله ُلَهُ حَسَنَةً كَامِلَةً. رواه البخاري -6010 ، ومسلم- 187
“নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর মহান প্রতিপালক থেকে বর্ণনা করেন: তিনি বলেন,নিশ্চয় আল্লাহ তা‘আলা ভাল ও মন্দ উভয়টিকে লিপিবদ্ধ করেন। অতঃপর তিনি এভাবে বর্ণনা করেছেন :‘যে ব্যক্তি কোন ভাল কাজ করার ইচ্ছা করে অথচ তা এখনও বাস্তবে পরিণত করেনি,তার জন্য আল্লাহ নিজের কাছে একটি পূর্ণাঙ্গ সওয়াব লিপিবদ্ধ করেন।”[বুখারী ৬০১০,মুসলিম ১৮৭ (২৪৬)]
যে ব্যক্তি নেকির কাজে নির্দেশ প্রদান করবে এবং এ কাজের জন্য উপদেশ ও পথ-প্রদর্শন করবে তার জন্য বিরাট সওয়াব রয়েছে। এ সম্পর্কে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন :
مَنْ دَعَا إِلى هُدًى كَانَ لَهُ مِنَ الأَجْرِ مِثْلُ أُجُوْرِ مَنْ تَبِعَهُ لَا يَنْقُصُ ذلِكَ مِنْ أُجُوْرِهِمْ شَيْئاً، وَمَنْ دَعَا إِلى ضَلَالَةٍ كَانَ عَلَيْهِ مِنَ الِإثْمِ مِثْلَ آثَامِ مَنْ تَبِعَهُ لَا يَنْقُصُ ذَلِكَ مِنْ آثَامِهِمْ شَيْئًا. رواه مسلم- 4831
“যে ব্যক্তি সঠিক পথের দিকে ডাকে তার জন্য এ পথের অনুসারীদের বিনিময়ের সমান বিনিময় রয়েছে। এতে তাদের বিনিময় কিছুমাত্র কম হবে না। আর যে ব্যক্তি কোন ভ্রান্ত পথের দিকে ডাকে,তার উক্ত পথের অনুসারীদের গুনাহের সমান গুনাহ হবে,এতে তাদের গুনাহ কিছুমাত্র কম হবে না।”[মুসলিম,হাদীস নং – ৪৮৩১]
নীচের হাদীসগুলো থেকে সওয়াবের কিছু ক্ষেত্র উল্লেখ করা হল:
1– قَالَ صَلَّى الله ُعَلَيهِ وَسَلَّمَ : مَنْ تَوَضَّأَ نَحْوَ وَضُوْئِيْ هَذَا ثُمَّ صَلَّى رَكْعَتَيْنِ لَا يُحْدِثُ فِيْهِمَا نَفْسَهُ غَفَرَ اللهُ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ . رواه البخاري 159ومسلم 331
১. রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: “যে ব্যক্তি আমার এই ওজুর ন্যায় ওজু করার পর একাগ্রচিত্তে দু’রাকাত (নফল) নামাজ পড়বে এবং অন্য কোন ধারণা তার অন্তরে উদয় হবে না,তার পূর্বকৃত সব গুনাহ ক্ষমা করে দেয়া হবে। ”[বুখারী ১৫৯ ,মুসলিম – ৩৩১ ]
2–قَالَ صَلَّى الله ُعَلَيهِ وَسَلَّمَ: مَنْ ثَابَرَ عَلَى ثِنْتَيْ عَشَرَةَ رَكْعَةً فِيْ الْيَوْمِ وَاللَّيْلَةِ دَخَلَ الْجَنَّةَ ؛ أَرْبَعاً قَبْلَ الظُّهْرِ؛ وَرَكْعَتَيْنِ بَعْدَهَا؛ وَرَكْعَتَيْنِ بَعْدَ الْمَغْرِبِ؛ وَرَكْعَتَيْنِ بَعْدَ الْعِشَاءِ؛ وَرَكْعَتَيْنِ بَعْدَ الْفَجْرِ. صحيح الترغيب 580 وصحاح السنن الترمذي 338 والنسائي1693 وابن ماجة 935 للألباني
২. রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: “যে ব্যক্তি দিন ও রাতে নিয়মিত বারো রাকাত নামাজ পড়বে,সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। (নামাযগুলো হলো) যোহরের ফরজের আগে দু’রাকাত ও পরে দু’রাকাত,মাগরিবের ফরজের পরে দু’রাকাত,এশার ফরজের পরে দু’রাকাত এবং ফজরের ফরজের পূর্বে দু’রাকাত। ”
[সহীহ আত্ তারগীব ৫৮০,সহীহ তিরমিজি ৩৩৮ এবং সহীহ নাসায়ী ১৬৯৩ ইবনে মাজাহ ৯৩৫,আলবানী।]
3–قَالَ صَلَّى الله ُعَلَيهِ وَسَلَّمَ: مَنْ مَشَى إِلى صَلَاةٍ مَكْتُوْبَةٍ فِي الْجَمَاعَةِ؛ فَهِيَ كَحَجَّةٍ؛ وَمَنْ مَشَى إِلى صَلَاةٍ تَطَوُّعٍ؛ فَهِيَ كَعُمْرَةٍ . صحيح الجامع- 6556
৩. রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: “যে ব্যক্তি জামাতে ফরজ নামাজ পড়ার উদ্দেশ্যে মসজিদে যায়,সে হজ আদায় করার সওয়াব পায় এবং যে ব্যক্তি কোন নফল নামাজ পড়ার উদ্দেশ্যে যায় সে ওমরা আদায় করার সওয়াব পায়।”[সহীহ আল-জামে – ৭৫৫৬ ]
4–قَالَ صَلَّى الله ُعَلَيهِ وَسَلَّمَ: مَنْ صَلَّى صَلَاةَ الصُّبْحِ فَهُوَ فِيْ ذِمَّةِ اللهِ ؛ فَلَا يَطْلُبَنَّكُمْ اللهُ مِنْ ذِمَّتِهِ بِشَيْءٍ ؛ فَإِنَّهُ مَنْ يَطْلُبُهُ مِنْ ذِمَّتِهِ بِشَيْءٍ يُدْرِكْهُ؛ ثُمَّ يَكُبُّهُ عَلَى وَجْهِهِ فِيْ نَارِ جَهَنَّمَ . صحيح الجامع 289
৪. রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : যেব্যক্তি ফজরের নামাজ পড়ল সে মহান আল্লাহর জিম্মা বা রক্ষণাবেক্ষণের অন্তর্ভুক্ত হলো। আর আল্লাহ যদি তার নিরাপত্তা প্রদানের হক কারো থেকে দাবি করে বসেন তাহলে সে আর রক্ষা পাবে না। তাই তাকে মুখ থুবড়ে জাহান্নামের আগুনে নিক্ষেপ করবেন। ”[সহীহ আল জামে – ২৮৯ ]
5–قَالَ صَلَّى الله ُعَلَيهِ وَسَلَّمَ : مَنْ تَوَضَأَّ لِلصَّلَاةِ فَأَسْبَغَ الْوَضُوْءَ ثُمَّ مَشَى إِلى الصَّلَاةِ الْمَكْتُوْبَةِ، ؛فَصَلَّاهَا مَعَ النَّاسِ, غَفَرَ اللهُ لَهُ ذُنُوْبَهُ. ابن خزيمة صحيح الجامع 6173
৫. রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন :“যে ব্যক্তি নামাজ পড়ার জন্য পরিপূর্ণরূপে ওজু করে ফরজ নামাজ পড়ার জন্য মসজিদে যায় এবং লোকদের সাথে নামাজ আদায় করে,আল্লাহ পাক তার সমস্ত গুনাহ মাফ করে দেন।”[ইবনে খুযাইমাহ,সহীহ আল জামে ৬১৭৩ ]
6–قَالَ صَلَّى الله ُعَلَيهِ وَسَلَّمَ : مَنْ صَلَّى لِلَّهِ أَرْبَعِيْنَ يَوْمًا فِيْ جَمَاعَةٍ يُدْرِكُ التَّكْبِيْرَةَ الْأُوْلى؛ كُتِبَ لَهُ بَرَاءَتَانِ، بَرَاءَةٌ مِنَ النَّارِ وَبرَاءَةٌ مَنَ النِّفَاقِ. الصحيحة 1979
৬. রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: “যে ব্যক্তি চলিশ দিন প্রথম তাকবীরের সাথে জামাতে নামাজ আদায় করবে তার জন্য দু’টি অব্যাহতি ও নিষ্কৃতি লেখা হয়। একটি অব্যাহতি হলো জাহান্নাম থেকে মুক্তি এবং আর একটি হলো মুনাফেকি বা দ্বিমুখী থেকে নিষ্কৃতি।” [আস্ সহীহ – ১৯৭৯ ]
7–قَالَ صَلَّى الله ُعَلَيهِ وَسَلَّمَ: مَنِ اتَّبَعَ جَنَازَةَ مُسْلِمٍ إِيْمَانًا وَاحْتِسَاباً وَكَانَ مَعَهُ حَتَى يُصَلَّى عَلَيْهَا وَيُفْرَغَ مِنْ دَفْنِهَا فَإِنَّهُ يَرْجِعُ مِنَ الْأَجْرِ بِقِيْرَاطَيْنِ ، كُلُّ قِيْرَاطٍ مِثْلُ أُحُدٍ، وَمَنْ صَلَّى عَلَيْهَا ثُمَّ رَجَعَ قَبْلَ أَنْ تُدْفَنَ فَإِنَّهُ يَرْجِعُ بِقِيْرَاطٍ . صحيح الترغيب 3948.
৭. রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন :“যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে এবং সওয়াবের উদ্দেশ্যে কোন মুসলমানের লাশের সাথে গেল এবং তার জানাজার নামাজ পড়া ও তার দাফন কাজ শেষ করা পর্যন্ত তার সাথে থাকল,সে দু’কিরাত সওয়াব নিয়ে ফিরবে। প্রতিটি কিরাত উহুদ পাহাড়ের সমান। আর যে ব্যক্তি মৃতের জানাজা পড়ে তাকে দাফন করার আগে ফিরে আসবে,সে এক কিরাত নিয়ে ফিরবে।” [সহীহ আত তারগীব ৩৯৪৮ (বুখারী ৯৩০ নং হাদীস) ]
8–قَالَ صَلَّى الله ُعَلَيهِ وَسَلَّمَ: مَنْ حَجَّ هذَا البَيْتَ ؛ فَلَم يَرفُثْ وَلَمْ يَفسُقْ رَجَعَ كََمَا وَلَدَتهُ أُمُّهُ. صحيح النسائي- 2464
৮. রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন :“যে ব্যক্তি এই (কাবা) ঘরের হজ্জ করল,তার মধ্যে সে অন্যায় ও অশ্লীল আচরণ করেনি,সে নিজের গুনাহ থেকে এমনভাবে ফিরে আসবে যেমন তার মা তাকে জন্ম দিয়েছিল।”[সহীহ নাসায়ী-২৪৬৪]
9–قَالَ صَلَّى الله ُعَلَيهِ وَسَلَّمَ: مَنْ طَافَ بِالْبَيْتِ (سَبْعًا) وَصَلَّى رَكْعَتَيْنِ؛ كَانَ كَعَدْلِ رَقَبَةٍ . الصحيحة 2725
৯. রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: “যে ব্যক্তি (কা’বা) ঘরের (সাতবার) তওয়াফ করবে এবং দুই রাকাত নামাজ আদায় করবে সে এক ক্রীতদাস আজাদ করার সওয়াব অর্জন করবে।”আস্-সহীহাহ -২৭২৫ ]
10–قَالَ صَلَّى الله ُعَلَيهِ وَسَلَّمَ : مَنْ طَلَبَ الشَّهَادَةَ أُعْطِيَهَا وَلَوْ لَمْ تُصِبْهُ. صحيح الترغيب 1277
১০. রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: “যে ব্যক্তি (ইসলামের পথে) শাহাদাতের আগ্রহ পোষণ করে তাকে সেই মর্যাদা দেয়া হয়,যদি সে নিহত নাও হয়।” [সহীহ আত্ তারগীব -১২৭৭ ]
11–قَالَ صَلَّى الله ُعَلَيهِ وَسَلَّمَ : مَنْ غَسَلَ مَيِّتًا فَسَتَرَهُ ؛ سَتَرَهُ اللَّهُ مِنَ الذُّنُوْبِ ؛ وَمَنْ كَفَنَ مُسْلِمًا كَسَاهُ اللَّهُ مِنَ السَّنْدُسِ. الصحيحة 2353
১১. রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: “যে ব্যক্তি কোন মৃত-ব্যক্তিকে গোসল দিল এবং তার গোপনীয়তা রক্ষাকরল,তাহলে আল্লাহ তাআলা উক্ত ব্যক্তিকে [গুনাহ থেকে] ঢেকে রাখবেন। এবং যে ব্যক্তি কোন মুসলমানকে কাফন পড়িয়ে দিল আল্লাহ তাআলা (জান্নাতে) তাকে পাতলা রেশমি বস্ত্র পরাবেন।” [আস্ সহীহাহ-২৩৫৩ ]
12–قَالَ صَلَّى الله ُعَلَيهِ وَسَلَّمَ: مَنِ اسْتَغْفَرَ ِللْمُؤْمِنِيْنَ وَالْمُؤْمِنَاتِ كَتَبَ اللَّهُ لَهُ بِكُلِّ مُؤْمِنٍ وَمُؤْمِنَةٍ حَسَنَةً. الصحيحة 6026
১২. রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: “যে ব্যক্তি ঈমানদার পুরুষ এবং ঈমানদার নারীর জন্য ক্ষমার প্রার্থনা করল,আল্লাহ তাআলা প্রত্যেক ঈমানদার পুরুষ এবং নারীর ক্ষমা প্রার্থনার বিনিময়ে একটি করে নেকি লিখে দেবেন।” [আস্ সহীহাহ ৬০২৬ ]
13–قَالَ صَلَّى الله ُعَلَيهِ وَسَلَّمَ: مَنْ قَرَأَحَرْفًا مِنْ كِتَابِ اللهِ فَلَهُ بِهِ حَسَنَةٌ وَالْحَسَنَةُ بَعَشْرِ أَمْثَالِهَا ؛ لاَ أَقُوْلُ ( الـم ) حَرْفٌ؛ وَلَكِنْ أَلِفٌ حَرْفٌ وَلاَمٌ حَرْفٌ وَمِيْمٌ حَرْفٌ . الصحيحة- 3327
১৩. রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: “যে ব্যক্তি আল্লাহর কিতাবের একটি হরফ পড়বে তার জন্য একটি সওয়াব আছে। আর একটি সওয়াব হল তার দশ গুন হিসেবে। আমি বলি না যে,“আলিফ-লাম-মীম”একটি হরফ বরং আলিফ একটি হরফ,লাম একটি হরফ এবং মীম একটি হরফ।” [আস্ সহীহাহ -৩৩২৭ ]
14–قَالَ صَلَّى الله ُعَلَيهِ وَسَلَّمَ: مَنْ قَالَ سُبْحَانَ اللهِ وَبِحَمْدِهِ فِيْ يَوْمٍ مِائَةَ مَرَّةٍ حُطَّتْ عَنْهُ خَطَايَاهُ وَاِنْ كاَنَتْ مِثْلَ زَبَدِ الْبَحْرِ. صحيح الكلم الطيب – 7
১৪. রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন :“যে ব্যক্তি দিবসে একশত বার سبحان الله وبحمده [আল্লাহ পূত ও পবিত্র এবং তাঁরই জন্য সকল প্রশংসা]পাঠ করে তার পাপসমূহ মুছে ফেলা হয়,যদিও তা সাগরের ফেনারাশির সমান হয়ে থাকে।”[সহীহ আল কালিমুত্ তাইয়েব – ৭ ]
15–قَالَ صَلَّى الله ُعَلَيهِ وَسَلَّمَ : مَنْ صَلَّى عَلَيَّ حِيْنَ يُصْبِحُ عَشْرًا وَحِيْنَ يُمْسِيُ عَشْرًا أَدْرَكَتْهُ شَفَاعَتِيْ يَوْمَ الْقِيَامَةِ . صحيح الجامع- 6357
১৫. রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন :“যে সকালে উঠে দশবার ও সন্ধ্যায় দশবার আমার উপরে দরুদ পাঠ করে,কেয়ামতের দিবসে সে আমার শাফাআত পাবে।”[সহীহ আল – জামে’৬৩৫৭ ]
16–قَالَ صَلَّى الله ُعَلَيهِ وَسَلَّمَ : مَنْ بَنَى لِلَّهِ مَسْجِدًا بَنَى اللَّهُ لَهُ بَيْتاً فِي الْجَنَّةِ أَوْسَعَ مِنْهُ . الصحيحة 3445
১৬. রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন :“যে ব্যক্তি আল্লাহর উদ্দেশ্যে মসজিদ তৈরি করবে,আল্লাহ তাআলা তার জন্য জান্নাতে এর চেয়ে প্রশস্ত একটি ঘর তৈরি করবেন।”[আস সহীহাহ -৩৪৪৫ ]
17–قَالَ صَلَّى الله ُعَلَيهِ وَسَلَّمَ: مَنْ قَالَ سُبْحَانَ اللهِ الْعَظِيْمِ وَبِحَمْدِهِ غُرِسَتْ لَهُ نَخْلَةٌ فِي الْجَنَّةِ. الصحيحة- 64
১৭. রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন :“যে ব্যক্তিسُبْحَانَ اللهِ الْعَظِيْمِ وَبِحَمْدِهِ (মহান আল্লাহ পাকের পবিত্রতা বর্ণনা করছি এবং তাঁর প্রশংসাও বর্ণনা করছি) বলবে,তার জন্য জান্নাতে এটি খেজুর গাছ লাগানো হবে।”[আস্ সহীহাহ- ৬৪ ]
18- قَالَ صَلَّى الله ُعَلَيهِ وَسَلَّمَ من قال في يوم مائة مرة:( لاَإِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَحْدَهُ لاَ شَرِيْكَ لَهُ لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيْرٍ)كان له عدل عشر رقاب وكتبت له مائة حسنة ومحي عنه مائة سيئة وكان له حرزا من الشيطان سائر يومه إلى الليل ولم يأت أحد بأفضل مما أتى به إلا من قال أكثر.) صحيح ابن ماجة 3064
১৮. রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন :যে ব্যক্তি দিবসে এই দু’আ পড়বে :
( لاَإِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَحْدَهُ لاَ شَرِيْكَ لَهُ، لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيْرٍ)
অর্থ: “আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই,তিনি একক,তাঁর কোন অংশীদার নেই। সমস্ত রাজত্ব তাঁরই,সকল প্রশংসা তাঁরই জন্য। তিনিই সব কিছুর উপর ক্ষমতাশীল।”সে ব্যক্তি দশজন ক্রীতদাস মুক্ত করার সমান সওয়াব লাভ করবে। আর তার জন্য একশত সওয়াব লেখা হবে এবং তার একশতটি গুনাহ মাফ হবে। উক্ত দিবসের সন্ধ্যা পর্যন্ত শয়তানের (প্ররোচনা ও বিভ্রান্তি) থেকে তাকে সুরক্ষিত রাখা হয়। কেউ নেই যে এই দুআটি পাঠকারীর চেয়ে উত্তম কোন দুআ পাঠে উক্ত মর্যাদা লাভ করতে পরে,তবে যে এর চেয়ে অধিক পাঠ করবে।”[সহীহ ইবনে মাজাহ – ৩০৬৪ ]
19–قَالَ صَلَّى الله ُعَلَيهِ وَسَلَّمَ: مَنْ حَفِظَ عَشَرَ آياَتٍ مِنْ أَوَّلِ سُوْرَةِ الْكَهْفِ عَصَمَ مِنْ فِتْنَةِ الدَّجَّالِ. صحيح الجامع 7201
১৯. রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যেব্যক্তি সূরা কাহাফের প্রথম দশ আয়াত মুখস্থ করবে সে দাজ্জালের ফিতনা থেকে রক্ষা পাবে।”[সহীহ আল জামে’৭২০১ ]
20–قا قَالَ صَلَّى الله ُعَلَيهِ وَسَلَّمَ من رأى مبتلى فقال: اَلْحَمْدُ لِلَّهَ الَّذِيْ عَافَا نِيْ مِمَّا ابْتَلاَكَ بِهِ وَفَضَّلَنِيْ عَلَى كَثِيْرٍ مِمَّنْ خَلَقَ تَفْضِيْلاً. لم يصبه ذلك البلاء – الصحيحة -602
২০. রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: “যে ব্যক্তি কোন রোগাক্রান্ত বা বিপদে পতিত লোককে দেখে ন্বিের দোয়াটি পাঠ করবে সে উক্ত বিপদে আক্রান্ত হবে না।”
( اَلْحَمْدُ لِلَّهَ الَّذِيْ عَافَا نِيْ مِمَّا ابْتَلاَكَ بِهِ وَفَضَّلَنِيْ عَلَى كَثِيْرٍ مِمَّنْ خَلَقَ تَفْضِيْلاً.)
অর্থ: “সমস্ত প্রশংসা সেই আল্লাহর জন্য যিনি তোমাকে যে-পরীক্ষায় নিপতিত করেছেন তা থেকে আমাকে নিরাপদে রেখেছেন এবং তাঁর সৃষ্টির অনেকের চেয়ে আমাকে অধিক অনুগ্রহ দান করেছেন।”[আস সহীহাহ- ৬০২ ]
21–قَالَ صَلَّى الله ُعَلَيهِ وَسَلَّمَ من قال : لاَإِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَحْدَهُ، لاَ شَرِيْكَ لَهُ، لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ، وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيْرٍ ) عشرا كان كمن أعتق رقبة من ولد إسماعيل. صحيح الجامع- 4653
২১. রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: “যে ব্যক্তি দশবার নিম্নের দোয়াটি পাঠ করবে,সে ইসমাইল (আ) এর বংশের একটি ক্রীতদাস মুক্ত করার সওয়াব পাবে।
( لاَإِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَحْدَهُ لاَ شَرِيْكَ لَهُ لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيْرٍ )
“আল্লাহ ছাড়া কোন সত্য ইলাহ নেই,তিনি একক,তাঁর কোন অংশীদার নেই। সমস্ত রাজত্ব তাঁরই,সকল প্রশংসা তাঁরই জন্য। তিনিই সব কিছুর উপর ক্ষমতাশীল।”[সহীহ আল জামে – ৪৬৫৩ ]
22–قَالَ صَلَّى الله ُعَلَيهِ وَسَلَّمَ: ( مَنْ صَلَّى عَلَيَّ صَلَاةً صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ عَشَرًا ) صحيح الترمذي- 402
২২. রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন :“যে আমার উপর একবার দরুদ পাঠ করবে,আল্লাহ তাআলা তার প্রতি দশবার রহমত অবতীর্ণ করবেন।” [সহীহ আত্ তিরমিজি – ৪০২]
23. قَالَ صَلَّى الله ُعَلَيهِ وَسَلَّمَ: ( اَلْأَنْصَارَ لاَ يُحِبِّهُمْ إِلاَّ مُؤْمِنٌ وَلاَ يُبْغِضُهُمْ إِلاَّ مُنَافِقٌ ؛ فَمَنْ أَحَبَّهُمْ أَحَبَّهُ اللَّهُ؛ وَمَنْ أَبْغَضَهُمْ أَبْغَضَهُ اللَّهُ) الصحيحة- 1975
২৩. রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: ‘আনসারগণকে ঈমানদার ছাড়া কেউ ভালোবাসে না এবং তাদের সাথে মোনাফেক ছাড়া কেউ শত্রুতা করে না। যে ব্যক্তি তাদেরকে ভালোবাসে,আল্লাহ তাআলা তাদেরকে ভালোবাসেন এবং যে ব্যক্তি তাদের সাথে শত্রুতা রাখে,আল্লাহ তাআলা তাদের সাথে শত্রুতা রাখেন।”[সিলসিলা আস্ সহীহাহ – ১৯৭৫]
24 –قَالَ صَلَّى الله ُعَلَيهِ وَسَلَّمَ: ( مَن أَنْظَرَ مُعْسِرًا أَوْ وَضَعَ لَهُ؛ أَظَلَّهُ اللَّهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ تَحْتَ ظِلِّ عَرْشِهِ يَوْمَ لاَ ظِلَّ إِلاَّ ظِلُّهُ. ) صحيح الترمذي 1052
২৪. রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম e‡j‡Qb:“যে ব্যক্তি কোন অভাবগ্রস্তকে সুযোগ দিল অথবা তার ঋণ মাফ করে দিল,আল্লাহ তাআলা তাকে কিয়ামতের দিন তাঁর আরশের ছায়ার নীচে আশ্রয় প্রদান করবেন,যেদিন উক্ত ছায়া ছাড়া অন্য কোন ছায়া থাকবে না। ”[সহীহ আত্ তিরমিজি ১০৫২ ]
25–قَالَ صَلَّى الله ُعَلَيهِ وَسَلَّمَ: مَنْ سَتَرَ مُسْلِمًا سَتَرَهُ اللهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ. رواه البخاري- 2262 مسلم- 4677
২৫. রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন :“যে ব্যক্তি কোন মুসলমানের (দোষ) গোপন রাখবে,আল্লাহ তাআলা কিয়ামতের দিন তার (দোষ) গোপন রাখবেন। ”[বুখারী- ২২৬২,মুসলিম – ৪৬৭৭ ]
26 –قَالَ صَلَّى الله ُعَلَيهِ وَسَلَّمَ: مَنْ كَانَ لَهُ ثَلاَثُ بَنَاتٍ فَصَبَرَ عَلَيْهِنَّ وَأَطْعَمَهُنَّ وَسَقَاهُنَّ وَكَسَاهُنَّ من جِدَتِهِ كُنَّ لَهُ حِجَاًباً مِنَ النَّارِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ. الصحيحة 294
২৬. রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন :“যে ব্যক্তির ঘরে তিনটি কন্যা সন্তান জন্ম গ্রহণ করল,অতঃপর উক্ত কন্যা সন্তানদের প্রতি সে সহনশীল হলো এবং ঐকান্তিকতার সাথে তাদেরকে ভরণ-পোষণ করল,কিয়ামতের দিন উক্ত কন্যা সন্তানেরা তার জন্য জাহান্নাম থেকে প্রতিবন্ধক পর্দা হবে।”[সিলসিলা আস্ সহীহাহ- ২৯৪]
27 –قَالَ صَلَّى الله ُعَلَيهِ وَسَلَّمَ : مَنْ ذَبَّ عَنْ عِرْضِ أَخِيْهِ بِالْغِيْبَةِ؛ كَانَ حَقًّا عَلَى اللَّهِ أَنْ يَعْتِقَهُ مِنَ النَّارِ صحيح. الترغيب–2847
২৭. রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: “যে ব্যক্তি তার অন্য মুসলমান ভাইয়ের গিবতের মাধ্যমে অমর্যাদা করা থেকে দূরে থাকল,আল্লাহর প্রতি উক্ত বান্দার হক হলো যে তাকে জাহান্নাম থেকে মুক্ত করা।” [সহীহ আত্ তারগীব ২৮৪৭ ]
28 –قَالَ صَلَّى الله ُعَلَيهِ وَسَلَّمَ: مَنْ كَظَمَ غَيْظًا وَهُوَ قَادِرٌ عَلَى أَنْ يُنَفِّذَهُ دَعَاهُ اللَّهُ سُبْحَانَهُ عَلَى رُؤُوْسِ الْخَلَائِقِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ حَتى يُخَيِّرَهُ مِنَ الْحُوْرِ الْعِيْنِ مَا شَاءَ. صحيح الترغيب- 2753
২৮. রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: “যে ব্যক্তি ক্রোধকে সংবরণ করল অথচ উক্ত ক্রোধকে সে বাস্তবায়নে সক্ষম,আল্লাহ তাআলা কিয়ামতের মাঠে সমস্ত সৃষ্টি জীবের সামনে তাকে আহ্বান করবেন এবং যতটি ইচ্ছে ততটি বেহেশ্তের হুর বেছে নেয়ার সুযোগ তাকে দেবেন। [ সহীহ আত্ তারগীব ২৭৫৩]
29 –قَالَ صَلَّى الله ُعَلَيهِ وَسَلَّمَ: مَنْ تَوَاضَعَ ِللهِ رَفَعَهُ اللهُ. الصحيحة 2328
২৯. রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: “যে ব্যক্তি আল্লাহর জন্য বিনয়ী হয় আল্লাহ তাআলা তার মর্যাদাকে বৃদ্ধি করে দেন। ”[সিলসিলা আস্ সহীহাহ- ২৩২৮]
30 –قَالَ صَلَّى الله ُعَلَيهِ وَسَلَّمَ: مَنْ أَحَبَّ أَنْ يُبْسَطَ لَهُ فِيْ رِزْقِهِ وَيُنْشَأَ لَهُ أَثَرُهُ فَلْيَصِلْ رَحِمَهُ. رواه البخاري 5527، ومسلم 4639
৩০. রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন :“যে ব্যক্তি পছন্দ করে যে,তার রিজিক বৃদ্ধি পাক এবং তার হায়াত দীর্ঘায়িত হোক,সে যেন আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখে।”[বুখারী ৪৬৩৯ ]
31 –قَالَ صَلَّى الله ُعَلَيهِ وَسَلَّمَ: مَنْ قَتَلَ وَزَّغًا فِيْ أَوَّلِ ضَرْبَةٍ كُتِبَتْ لَهُ مِائَةُ حَسَنَةٍ وَفَي الثَّانِيَةِ دُوْنَ ذَلِكَ وَفِي الثَّالِثَةِ دُوْنَ ذَلِكَ. صحيح الترغيب- 2978
৩১. রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:“যে ব্যক্তি কোন গিরগিটিকে (মুহূর্তে রং পরিবর্তন করার ক্ষমতাসম্পন্ন প্রাণী) প্রথম আঘাতে হত্যা করল তার জন্য একশতটি নেকী লেখা হবে,দ্বিতীয় এবং তৃতীয় আঘাতে হত্যার জন্য এর চেয়ে কম নেকী লেখা হবে।”[সহীহ আত্ তারগীব – ২৯]
সকল প্রশংসা আল্লাহর জন্য এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি দরুদ ও সালাম বর্ষিত হোক। সওয়াব অর্জনের ক্ষেত্র অনেক এবং ভাল ও উত্তম কাজের প্রতিদান বিরাট।