
গির্জা থেকে জন্ম নিল ভেনিসে প্রথম মসজিদ
ইতালির ঐতিহাসিক ভেনিস নগরীতে স্থাপিত হলো সেখানকার প্রথম মসজিদ। একটি খ্রিস্টান চার্চকে সংস্কার করে স্থাপিত মসজিদটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয় ৮ মে শুক্রবার, 2015।
.
মসজিদটি আগামী সাত মাস পরীক্ষামূলকভাবে চলবে। শান্তা মারিয়া দেলা মিজেরিকডিয়া নামের চার্চটি প্রায় ৪০ বছর আগে বন্ধ করে দেয়া হয়; এর পর থেকে গীর্জাটি পরিত্যক্ত অবস্থায় ছিল। সম্প্রতি কাতার সরকারের অর্থায়নে আধুনিক শিল্পকলা নিয়ে বিশ্বের সবচেয়ে নামকরা প্রদর্শনী ‘ভেনিস বিনালে’র অংশ হিসেবে এটাকে মসজিদে রূপান্তরিত করা হয়।
.
সুইডেনের শিল্পী ক্রিস্টোফার বুশেলের ডিজাইন অনুযায়ী চার্চটি সংস্কার করে মসজিদে রূপান্তরিত করা হয়। এটা ভেনিসের প্রথম মসজিদ।
.
মসজিদ নির্মাণ প্রসঙ্গে ভেনিস ইসলামিক কমিউনিটির সভাপতি মোহাম্মদ আমীন আল আহদাব নিউইয়র্ক টাইমসকে বলেন, প্রতি বছর এখানে লাখো মুসলিম পর্যটক আসেন। তারা বিস্ময়ের সঙ্গে জিজ্ঞেস করেন, এ শহরে ইসলামের ইতিহাসের বহু নিদর্শন দেখা যায়- কিন্তু সেখানে কোনো মসজিদ নেই কেন? শত শত বছর ধরে ভেনিসের বিভিন্ন স্থাপনায় ইসলামের স্থাপত্যশৈলীর প্রভাব বিদ্যমান রয়েছে। সেখানে বহু মুসলিম বসবাস করেন। কিন্তু সেখানে কোনো মসজিদ না থাকায় তাদেরকে স্টোর রুম বা দোকানে নামাজ আদায় করতে হয়। এখন এই সমমস্যার সমাধান হলো।
.
ভেনিস প্রায় এক হাজার বছর ধরে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে ছিল। তখন পার্শ্ববর্তী উসমানীয় সাম্রাজ্যের সাথে এটির ব্যবসায়িক সম্পর্ক থাকলেও ভূমধ্যসাগরের পূর্ব দিক নিয়ন্ত্রণের জন্য অনেক সময় বিবাদেও জড়িত হয়েছিল। এক পর্যায়ে ১৫৭১ সালে তুর্কি বাহিনীর সাথে গ্রীসের লেপান্ত নামক স্থানে ভয়াবহ যুদ্ধ হয় এবং এতে ভেনিস শোচনীয়ভাবে পরাজিত হয়। এর প্রায় সাড়ে ৫০০ বছর পর চলতি বছরের শুরুর দিকে কাতার ভেনিসের রিয়ালটো ব্রিজের কাছে ইসলামী সংস্কৃতির উপর একটি জাদুঘর তৈরির প্রস্তাব দেয়। বিভিন্ন গোষ্ঠীর বিরোধিতার মুখেই অবশেষে কাতারের প্রচেষ্টা সফল হলো।
.
ইতালির ঐতিহাসিক শহর ভেনিসে ২৯টি দেশের জনগণ জীবনযাপন করছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোয় এ পর্যটন শহরে বেশ কিছু জমি ক্রয় করেছে আরবরা। ভেনিসে মসজিদ প্রতিষ্ঠার ফলে এখানে মুসলমানেরা নামাজ আদায় ও মসজিদটি দেখার ভিড় জমাচ্ছে। মসজিদটি আরবি ও ইসলামি সজ্জায় সজ্জিত করা হয়েছে। মসজিদ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আইসল্যান্ড সংখ্যালঘু মুসলিম প্রধান ‘ইবরাহিম সাফিরির অগানারসুন’ বলেন, এটা মুসলমানদের জন্য একটি বিরাট সাফল্য। আমাদের আশা এ শহরে আরও কিছু মসজিদ অচিরেই প্রতিষ্ঠিত হবে।
