
রাজ্যের পরিবর্তে পুস্তক
অষ্টম শতকের শেষ ভাগ। পূর্ব রোম সাম্রাজ্যের সিংহাসনে আরোহণ করেছেন নিসোফোরাস। শক্তিগর্বে অন্ধ হয়ে তিনি বাগদাদের খলীফাকে পূর্ব নির্ধারিত করা দেয়া বন্ধ করে দিলেন। কর বন্ধ করেই তিনি ক্ষান্ত হলেন না। এক ঔদ্ধত্যপূর্ণ পত্রে তিনি লিখলেন, ‘পূর্বে আপনাকে যে সমস্ত মণি-মুক্তা দেয়া হয়েছে তা অবিলম্বে ফেরত পাঠাবেন। নয়তো অস্ত্ৰই এর মীমাংসা করবে’।
খলীফা উত্তরে শুধু লিখলেন, ‘চিঠির উত্তর চোখেই দেখতে পাবে’।
নিসোফোরাসের পত্রের উত্তর দিতে খলীফা হারুনুর রশীদ সেই দিনই বিপুল সৈন্যবাহিনী নিয়ে অগ্রসর হলেন।
হেকক্লিয়াতে ভীষণ যুদ্ধ হলো। খৃষ্টান শক্তি শোচনীয় পরাজয় বরণ করলো। নিসোফোরাস ভীত হয়ে পূর্বের চাইতে অধিক কর দিতে সম্মত হয়ে সন্ধি ভিক্ষা করলেন।
খলীফা নিসোফোরাসের রাজ্য ততদিনে প্ৰায় অর্ধেক গ্ৰাস করে ফেলেছেন। তবু তিনি এক শর্তে সন্ধি করতে রাজি হলেন।
এক অপূর্ব শর্ত। পৃথিবীর কোন যুদ্ধে এরূপ শর্তে সন্ধি হয়নি। খলীফা বলে পাঠালেন, ‘আপনার রাজ্যে সাহিত্য ও বিজ্ঞান সম্বন্ধে যে সমস্ত পুস্তক আছে তার এক একটি কপি আমাকে পাঠিয়ে দেবেন। পরিবর্তে আমি আপনার রাজ্যের অর্ধেক অংশ আপনাকে ফিরিয়ে দেব’।
রাজ্যের পরিবর্তে পুস্তক। অদ্ভুত শর্ত। কিন্তু জ্ঞানের সাধক বাগদাদের খলীফার পক্ষেই এইরূপ শর্ত প্ৰদান সম্ভব। খলীফা এশিয়া মাইনরে দলে দলে পন্ডিত পাঠালেন। বহুদিনের পরিশ্রমের পরে তারা খলীফাকে বহু মূল্যবান পুস্তক পাঠিয়ে দিলেন।