
মৃত্যুর পরেও পর্নোগ্রাফি!
শাইখ, আমার এক বন্ধু ইন্টারনেটের বিষয়গুলোতে ছিল বেশ দক্ষ। একদিন সে এমন এক ওয়েবসাইটে ঢুকে যা ছিল অশ্লীল ছবিতে পরিপূর্ণ, মানে পর্নোগ্রাফি। যে কেউ কিছু টাকা দিয়ে ওই ওয়েবপেজের সদস্য হলে প্রতি সপ্তাহে ইমেইলে অশ্লীল ছবির ফাইল পাঠানো হয়।
তো আমার বন্ধু ওই ওয়েবপেজে সাবস্ক্রাইব করে। যখনি ও কোন ফাইল রিসিভ করতো, তখনি তা মোবাইলে আপলোড করে বন্ধুদের দেখাত। আমাদেরও দেখতে খুব ভালো লাগত। তাই আমরা জিজ্ঞেস করলাম তুই কোত্থেকে, কিভাবে এগুলি জোগাড় করিস। আমাদেরকে বল। আমরাও চাই।
তখন ‘ও’ আমাদেরকে বলল, আরে না না এগুলোর জন্যতো টাকা দিতে হয়। আমরা বললাম, টাকা কোন সমস্যা না, তুই শুধু আমাদের বল। আমরাও সদস্য হব। তখন ‘ও’ বলল, তোদের শুধু শুধু টাকা নষ্ট করে লাভ নেই। একটা কাজ করি । তোরা সবাই যদি আমাকে তোদের ইমেইল আইডি দিস তাহলে আমার কাছে আসা ইমেইল গুলি তোদেরকে ফরওয়ার্ড করে দিবো।
সবাই ভাবলাম বুদ্ধিটা খারাপ না। তো আমরা সবাই আমাদের, আমাদের বন্ধুদের, তাদের বন্ধুদের ইমেইল আইডি ওকে দিলাম। ও সবার ইমেইল আইডিগুলোর একটি লিস্ট বানালো। এরপর থেকে প্রতি সপ্তাহেই নিয়মিত আমাদের সবার আইডিতে ওর আইডি থেকে অশ্লীল ছবির ফাইল এসে জমা হত। এভাবে ছয়মাস গেল। এরপর হঠাৎ একদিন এক এক্সিডেন্টে ও মারা গেল। ওর এভাবে মারা যাওয়া দেখে আমরা সবাই খুব ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। খুব কষ্টও লেগেছিলো।
শাইখ, জানাজার নামাজ পড়ে ওকে কবরে শুইয়ে আমি বাসায় এসে যখন আমার ইমেইল চেক করতে বসলাম, তখন দেখলাম ওর আইডি থেকে একটা নতুন ইমেইল। আমি ভাবলাম এটা হয়তো পুরোনো ইমেইল। ভুলে চেক করা হয়নি। তাই আমি সেটা ডিলিট করে দিলাম। কিন্তু পরের সপ্তাহে আমি আবারো ওর কাছ থেকে সেই অশ্লীল ছবির ইমেইল রিসিভ করলাম। তখন চেক করে দেখলাম এটা নতুন ইমেইল, পুরোনো না।
সাথে সাথেই আমি বুঝে গেলাম যে, ‘ও’ নিশ্চয়ই ওর ইমেইলে অটো ফরওয়ার্ড অপশন চালু করে রেখেছিল। তাই হয়তো আমি ইমেইলগুলো রিসিভ করছি। তখন আমি ওই ওয়েবসাইটে একটা চিঠি লিখে জানিয়ে দেই যে, এই ব্যক্তিটি এখন মৃত। তাই দয়া করে তারা যেন ওর কাছে ফাইল পাঠানো বন্ধ করে দেয়। ওর পাসওয়ার্ড চেয়ে তারা আমাকে রিপ্লাই ব্যাক করে। কিন্তু জানা না থাকায় আমি ওর পাসওয়ার্ড দিতে ব্যর্থ হই।
তখন তারা আমাকে বলল, ‘দুঃখিত; পাসওয়ার্ড ছাড়া আমরা কিছুই করতে পারবোনা। এই ব্যক্তির এখনো সাড়ে চার বছরের জন্য সাবস্ক্রিপশন বাকী রয়ে গেছে। তাই সাবস্ক্রিপশন শেষ না হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।’
ওগো শাইখ, আজ প্রায় দুই বছর হয়ে গেল। আমার বন্ধু কবরে শুয়ে আছে। অথচ প্রতি সপ্তাহে ‘ও’ আর ওর সাথে সাথে আমরাও অশ্লীল ছবির ইমেইল রিসিভ করে যাচ্ছি!!
[এই গল্পটি সত্য। শাইখ মুহাম্মাদ আল আরিফির কাছে, স্বয়ং মৃত ব্যক্তিটির বন্ধু ঘটনাটা বর্ণনা করেন। মুফতি মেনক ঘটনাটি শুনে বলেছিলেন, দোয়া করি আল্লাহ্ যেন ছেলেটিকে মাফ করেন, ওর অন্য সব বন্ধুরা অনুতপ্ত হয়ে এখন এসব খারাপ জিনিস দেখা ছেড়ে দিয়েছে।]
(সংগৃহীত)