
বর্ষবরণ নয়, এ এক সুস্পষ্ট সাংস্কৃতিক যুদ্ধ
আকবরের নবরত্ন সভার প্রভাবশালী সদস্য ফতেহ্উল্লাহ্ সিরাজ প্রবর্তিত বাংলা সনের প্রথম দিনটিকে বাঙালি উৎসবের লেবাস পরিয়ে হিন্দুদের নানা পুজা-অর্চনাকে সার্বজনীন রূপ দেয়ার অপর নাম হলো পহেলা বৈশাখ উদযাপন বা বাংলা নববর্ষ বরণ। ইসলামবৈরীদের নিয়ন্ত্রিত মিডিয়ার বদৌলতে ইতোমধ্যে হিন্দুদের বহুবিধ পুজা এখন মুসলিম বাঙালীদের কাছেও নিছক বর্ষবরণ অনুষ্ঠান!! বছর জুড়ে তারা যেসব পুজা করে, আমরা বাঙালিয়ানার নামে সেগুলোর অনুকরণ করি মাত্র এক দিনে!!!
গণেশ পুজার ‘মঙ্গল যাত্রা’ থেকে নেওয়া মঙ্গল শোভাযাত্রা, ‘চৈত্র সংক্রান্তি পুজা’ থেকে নেওয়া চৈত্রসংক্রান্তি, হিন্দু-বৌদ্ধদের ‘উল্কিপূজা’ থেকে নেওয়া উল্কি উৎসব, বিভিন্ন হিংস্র-অহিংস্র জীব-জন্তু পুজা থেকে নেওয়া রাক্ষস-খোক্ষসের মুখোশ ও পশু-পাখীর প্রতীমা নিয়ে উৎসব, হিন্দুদের ‘আশ্বিনে রান্না কার্তিকে খাওয়া’ প্রথার আদলে চৈত্রের শেষদিনে রান্না করা অন্নে জল ঢেলে পহেলা বৈশাখের সকালে পান্তা খাওয়ার প্রথা এবং পুজোর অপরিহার্য আইটেম ঢোল-তবলা, কুলা ও হিন্দু রমনীর লাল সিঁদুরের অবিকল লালটিপ এবং পুজোর লেবাস শাদা শাড়ী ইত্যাদি- হলো পহেলা বৈশাখ বা বাংলা নববর্ষ উদযাপনের প্রধান উপাদান!!
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন- যে ব্যক্তি কোন ধর্মের মানুষের (ধর্মীয় আচারের) অনুকরণ বা স্বাদৃশ্য গ্রহণ করবে, সে তাদের অন্তর্ভুক্ত হবে। -সুনানে আবু দাউদ
এদেশের বেশিরভাগ মুসলিমের মুসলমানিত্ব জাহির হয় বছরের দু’টি দিনে ঈদ পালনের মাধ্যমে। সামনে হয়তো ‘সেই নামকা ওয়াস্তে ইসলাম’ও থাকা না থাকার প্রশ্ন ওঠবে।
কারণ, এ বছর সরকার পহেলা বৈশাখ উদযাপনে যোগ করেছে ভিন্ন মাত্রা। ঈদ বোনাসের আদলে প্রথম বারের মতো চাকুরিজীবিদের জন্য চালু হলো বৈশাখ বোনাস!! আশংকা হয়, এক সময় কথা উঠবে, ঈদ হলো আরবদের বার্ষিক উৎসব। আমরা কেন তা গায়ে মাখবো? বাঙালীর বার্ষিক উৎসব হলো পহেলা বৈশাখ!!
রচনায় : শাইখ আহমাদুল্লাহ